তুর্ক-মঙ্গোল ঐতিহ্য

তুর্ক-মঙ্গোল ঐতিহ্য (Turko-Mongol tradition) হচ্ছে একটি সাংস্কৃতিক বা নৃ-সাংস্কৃতিক একীভূতকরণ যা চতুর্দশ শতকের প্রথম দিকে মঙ্গোল সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী রাজ্য যেমন চাগতাই খানাত এবং গোল্ডেন হোর্ড এর নেতৃত্বস্থানীয় সম্ভ্রান্তদের মধ্যে বিকশিত হয়। এই সম্ভ্রান্তগণ তুর্কীয় ভাষাসমূহ এবং ইসলাম গ্রহণ করেন, যেখানে তারা একই সাথে মঙ্গোল রাজনৈতিক এবং আইনগত প্রতিষ্ঠানসমূহ ধরে রাখে।[১] পরবর্তীতে অনেক মধ্য এশীয় রাজ্য এই ঐতিহ্যকে প্রচণ্ডভাবে গ্রহণ করে, যাদের মধ্যে তৈমুরি সাম্রাজ্য, কাজাখ খানাত, কাজানের খানাত, নোগাই খানাত, ক্রিমীয় খানাত এবং মুঘল সাম্রাজ্য উল্লেখযোগ্য।

১৩৩৫ সালের এশিয়া, এখানে তুর্ক-মঙ্গোল সংস্কৃতির জাতিগুলোকে দেখানো হয়েছে, যেমন গোল্ডেন হোর্ড এবং চাগতাই খানাত

এরও পূর্বে প্রাগৈতিহাসিক কালেও তুর্ক-মঙ্গোল ঐতিহ্য ছিল। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দের মধ্যেই প্রোটো-তুর্কীয় ভাষা থেকে প্রোটো-মঙ্গোলীয় ভাষার পূর্বপুরুষ ভাষাগুলোতে প্রচুর শব্দ প্রবেশ করে। ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলোতে তুর্কীয় ও মঙ্গোলীয় ভাষাগুলোতে অনেক সাদৃশ্য দেখা যায় (যেমন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তির ক্ষেত্রে যথাক্রমে *b-, *s-, *i- প্যারাডাইম)। এরকম অন্যান্য সাদৃশ্যগুলো খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ অব্দের পূর্বে তুর্কীয় ভাষাগুলোর বিভিন্ন শ্রেণিবিভাগে বিভক্ত হয়ে বিকশিত হবার আগেই তৈরি হয়ে যায়।[২] তুর্কীয় ও মঙ্গোলীয় মানুষেরা অন্তত সেই সময় থেকেই একই ধর্ম তেনগ্রিবাদ এর অনুসারী ছিল।

প্রাচীন কালে অনেক সময় ব্যাপী ভাষাগত সংস্পর্শে থাকার কারণে তুর্কীয় ও মঙ্গোলীয়দের ভাষায় আরও বেশি মৌলিক ফনোট্যাক্টিক, ব্যাকরণগত ও টাইপোলজি সংক্রান্ত সাদৃশ্য দেখা যায় (যেমন সঙ্কালিক স্বরসঙ্গতি, ব্যাকরণগত লিঙ্গের অভাব, প্রচুর সংযোজন, উচ্চমাত্রার সাদৃশ্যপূর্ণ ফনোট্যাকটিকাল নিয়ম)।[২] অতীতে এরকম সাদৃশ্যগুলোর এদের মধ্যকার জিনগত সম্পর্ক অনুসন্ধানে ধাবিত করে, আর সেখান থেকে আলতাইক ভাষা পরিবার নামক ধারণার জন্ম হয় যা এখন বিস্তৃত পরিসরে পণ্ডিতমহলে গৃহীত। আরও সম্প্রতি, জিনগত সম্পর্কের নির্দিষ্ট প্রত্যক্ষ প্রমাণের অভাব হেতু, এই সাদৃশ্যগুলোকে ভাষা সংস্পর্শের তিনটি জ্ঞাত সময়কাল অনুসারে ভাগ করা হয়েছে। এই সাদৃশ্যগুলোর কারণে উত্তর-পূর্ব এশীয় ভাষা অঞ্চল এর একটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে তুংগুসীয়, কোরীয় এবং জাপনীয় ভাষা পরিবারও অন্তর্গত, যদিও তুর্কীয় এবং মঙ্গোলীয় ভাষাগুলোই সব থেকে বেশি সাদৃশ্য প্রদর্শন করে।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Beatrice Forbes Manz (১৯৮৯)। The Rise and Rule of TamerlaneCambridge University Press। পৃষ্ঠা 6–9। আইএসবিএন 978-0-521-34595-8 
  2. Janhunen, Juha (২০১৩)। "Personal pronouns in Core Altaic"। Martine Irma Robbeets; Hubert Cuyckens। Shared Grammaticalization: With Special Focus on the Transeurasian Languages। পৃষ্ঠা 221। 
🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ কোপা আমেরিকাবিশেষ:অনুসন্ধানবিধানচন্দ্র রায়তুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকোপা আমেরিকাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলদক্ষযজ্ঞকাজী নজরুল ইসলামসিরাজউদ্দৌলামীর জাফর আলী খানবাংলাদেশশেখ মুজিবুর রহমানসাঁওতাল বিদ্রোহফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংসরকারলালসালু (উপন্যাস)বিরাট কোহলিব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলছয় দফা আন্দোলন২০২৪ কোপা আমেরিকা গ্রুপ এবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধসিধু কানুএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)উয়েফা ইউরো ২০২৪বাংলা ভাষা আন্দোলনআবহাওয়ারোহিত শর্মারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)চন্দ্রবোড়াকল্কি ২৮৯৮ এডিআর্জেন্টিনা–ব্রাজিল ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতামিয়া খলিফাপলাশীর যুদ্ধসাইবার অপরাধপহেলা বৈশাখ