ব্রায়ান স্ট্যাদাম

ইংরেজ ক্রিকেটার

জন ব্রায়ান জর্জ স্ট্যাদাম, সিবিই (ইংরেজি: John Brian Statham; জন্ম: ১৭ জুন, ১৯৩০ - মৃত্যু: ১০ জুন, ২০০০) ম্যানচেস্টারের গর্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ ফাস্ট বোলার ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। তাকে বিংশ শতকে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ফাস্ট বোলাররূপে গণ্য করা হয়। বলকে প্রকৃতভাবে দ্রুততর করতে, পর্যাপ্ত গতি আনয়ণে সক্ষমতা দেখাতে পারঙ্গমতার পরিচয়ে তার ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। নতুন কিংবা পুরনো বলকে নিখুঁতভাবে সঠিক নিশানায় ফেলতেন ব্রায়ান স্ট্যাদাম। তার এ ধারা কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ল্যাঙ্কাশায়ারটেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের পক্ষে বহমান ছিল। তার অবিশ্বাস্য স্ট্রাইক করার ক্ষিপ্রময়তার কারণে বিংশ শতকে বিশেষ করে ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে ইংল্যান্ডের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ গড়ে উঠেছিল।

ব্রায়ান স্ট্যাদাম
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জন ব্রায়ান স্ট্যাদাম
জন্ম(১৯৩০-০৬-১৭)১৭ জুন ১৯৩০
গর্টন, ম্যানচেস্টার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১০ জুন ২০০০(2000-06-10) (বয়স ৬৯)
স্টকপোর্ট, বৃহত্তর ম্যানচেস্টার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৫৬)
১৭ মার্চ ১৯৫১ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট৩১ আগস্ট ১৯৬৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫০-১৯৬৮ল্যাঙ্কাশায়ার
১৯৫০/৫০-১৯৬২/৬৩এমসিসি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টএফসিএলএ
ম্যাচ সংখ্যা৭০৫৫৯১৫
রানের সংখ্যা৬৭৫৫,৪২৪৭২
ব্যাটিং গড়১১.৪৪১০.৮০১৪.৪০
১০০/৫০০/০০/৫০/০
সর্বোচ্চ রান৩৮৬২৩৬
বল করেছে১৬,০৫৬১০০,৯৫৫৯৯১
উইকেট২৫২২,২৬০২২
বোলিং গড়২৪.৮৪১৬.৩৭২১.০৯
ইনিংসে ৫ উইকেট১২৩
ম্যাচে ১০ উইকেট১১
সেরা বোলিং৭/৩৯৮/৩৪৫/২৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং২৮/–২৩০/–৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

তার অপর তিন ভাইসহ তিনিও জাতীয় সেবার অংশ হিসেবে রয়্যাল এয়ার ফোর্সে যোগ দেন। স্টাফোর্ডে থাকতেন ও সপ্তাহ শেষে বাড়ী ফিরে ক্রিকেট খেলতেন। স্টকপোর্ট ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দেন ও দলের সদস্যরূপে সেন্ট্রাল ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে অংশগ্রহণ করতেন।[১] ডেন্টন ওয়েস্টের পক্ষে লেফট উইঙ্গার হিসেবে ফুটবলও খেলতেন তিনি। ফলশ্রুতিতে লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটির অনুশীলনীতে যাবার জন্যে আমন্ত্রিত হন। কিন্তু তার বাবা ফুটবলকে পেশা হিসেবে নেয়ার ক্ষেত্রে বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়ান।[২] আঠারো বছর বয়সে ল্যাঙ্কাশায়ারের বোলিং আক্রমণ বৃদ্ধিকল্পে কর্মকর্তারা তার সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। ১৯৫০ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে ১,৮১৬ উইকেট লাভ করে ক্লাব রেকর্ড গড়েন।

১৯৬২-৬৩ মৌসুমে অ্যাডিলেড ওভালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে অ্যালেক বেডসারের গড়া ২৩৬ টেস্ট উইকেটপ্রাপ্তির রেকর্ড অতিক্রম করেন। ২৪.২৭ গড়ে তার গড়া ২৪২ টেস্ট উইকেটের রেকর্ডটি দুই মাস পর নতুন বলের বোলিং অংশীদার স্বদেশী ফ্রেড ট্রুম্যান নিউজিল্যান্ড সফরে ভেঙ্গে ফেলেন। স্ট্যাদাম তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৪.৮৪ গড়ে ২৫২ টেস্ট উইকেট পেয়েছিলেন।

কাউন্টি ক্রিকেটে তার অসম্ভব ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনার প্রেক্ষিতে ইংরেজ কর্তৃপক্ষ ৩৫ বছর বয়সেও তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামাতে বাধ্য হয়েছিল। স্ট্যাদাম ইংরেজ কর্তৃপক্ষকে নিরাশ করেননি। প্রথম ইনিংসে ৪০ রান দিয়ে ৫ উইকেট পান। এমসিসি কর্তৃপক্ষ তাকে পঞ্চমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া সফরে অন্তর্ভুক্ত করলেও তিনি যাননি।

খেলার ধরন

সম্পাদনা

স্ট্যাদাম ফাস্ট বোলার হিসেবে তার শান্ত মেজাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। খুব কম সময়ই বলকে বাউন্সারে পরিণত করতেন। কোন কারণে বাউন্সারের প্রয়োজন পড়লে ব্যাটসম্যানকে পূর্বেই অবহিত করতেন তিনি। কিন্তু তার সোজা, ফুল-লেন্থের বলগুলো সহজেই ব্যাটসম্যানের পায়ে আঘাত হানতে সক্ষম হতো। আউট-ফিল্ডার হিসেবেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি যা আধুনিককালের একদিনের আন্তর্জাতিকের জন্য ভীষণ উপযোগী ছিল।

সম্মাননা

সম্পাদনা

ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে ৯২ উইকেট দখলের প্রেক্ষিতে ১৯৫৫ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে ভূষিত হন।[৩] ১৯৬৮ সালে ক্রিকেটে অনবদ্য সেবা প্রদানের প্রেক্ষিতে তাকে সিবিই পদবী প্রদান করা হয়। ৩০ আগস্ট, ২০০৯ তারিখে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৪]

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

১৯৭০ সালে ল্যাঙ্কাশায়ার কমিটির সদস্য মনোনীত হন। এছাড়াও ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এর সদস্য ছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৮ মেয়াদে ক্লাবের সভাপতিরও দায়িত্বে ছিলেন।[১] ক্রিকেটার হিসেবে অর্থ উপার্জন করা স্বত্ত্বেও শেষ বয়সে তাকে বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে। এছাড়াও তিনি ক্রিকেট মাঠের বাইরেও দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করতেন। ১৯৮৯ সালে তার এরূপ শোচনীয় আর্থিক দুরবস্থার বিষয়ে অবগত হয়ে ফ্রেড ট্রুম্যান, স্ট্যাদামের সাহায্যার্থে দুইটি স্মারকসূচক নৈশভোজের আয়োজন করেন।[১]

স্টকপোর্টে নিজ ৭০তম জন্মদিন উদযাপনের এক সপ্তাহ পূর্বে ১০ জুন, ২০০০ তারিখে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তার দেহাবসান ঘটে। এ সময় তার স্ত্রী অড্রে এবং দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান ছিল।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Brian Statham" (ইংরেজি ভাষায়)। The Guardian। ২৩ আগস্ট ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০০৮ 
  2. Howat, Gerald M. D. (২০০৪), "Statham, (John) Brian (1930–2000)", Oxford Dictionary of National Biography (ইংরেজি ভাষায়), Oxford: Oxford University Press, সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১১ 
  3. "Wisden Cricketers of the Year" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  4. "Brian Statham inducted into Cricket Hall of Fame" (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৬ 

গ্রন্থপঞ্জী

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
রেকর্ড
পূর্বসূরী
অ্যালেক বেডসার
বিশ্বরেকর্ড - খেলোয়াড়ী জীবনে সর্বাধিক টেস্ট উইকেট প্রাপ্তি
৬৭ টেস্টে ২৪২ উইকেট (২৪.২৭)
রেকর্ড ধারণ: ২৬ জানুয়ারি, ১৯৬৩ থেকে ১৫ মার্চ, ১৯৬৩
উত্তরসূরী
ফ্রেড ট্রুম্যান
🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)২০২৪ কোপা আমেরিকারবীন্দ্রনাথ ঠাকুরচন্দ্রবোড়াকোপা আমেরিকাআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়বাংলাদেশফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংশেখ মুজিবুর রহমানকাজী নজরুল ইসলাম২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপউয়েফা ইউরো ২০২৪ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলসুন্দরবনলালনতরুণ রাম ফুকনএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধমিয়া খলিফাছয় দফা আন্দোলনমুজিবনগরশিল্প বিপ্লবভূমি পরিমাপউয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাওম বিড়লাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনসাইবার অপরাধবাংলাদেশের সাপের তালিকা২০২৪ কোপা আমেরিকা গ্রুপ এবাংলা বাগধারার তালিকাআবহাওয়ারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)শাকিব খানবাংলা ভাষাআর্জেন্টিনা–ব্রাজিল ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা