রামেন
রামেন (/ˈrɑːmən/) (ラーメン rāmen, আইপিএ: [ɾaꜜːmeɴ]) হচ্ছে জনপ্রিয় জাপানী খাবার। এটি তৈরি করা হয় চীনের গমের নুডলস দ্বারা এবং পরিবেশিত করা হয় মাংসের ঝোলের সাথে কিংবা মাছের, মাঝেমধ্যে সয়া সস বা মিসোর স্বাদে। জাপানের প্রায় প্রত্যেক অঞ্চলের নিজস্ব ধরনের রামেন আছে, তনকতসু(শোকরের হাড়ের ঝোল) থেকে কুইশু, মিসোর স্বাদে হক্কাইদো।[৪][৫]
অন্যান্য নাম | শিনা, শোভা, চুকা শোভা |
---|---|
ধরন | নুডলস স্যুপ |
উৎপত্তিস্থল | জাপান[১][২][৩] |
পরিবেশন | গরম |
প্রধান উপকরণ | চীনের গমের নুডলস, মাংস বা মাছের ঝোল, সবজি বা মাংস[১][২] |
ভিন্নতা | বিভিন্ন রূপ, বিশেষ করে আঞ্চলিকভাবে |
ইতিহাস
সম্পাদনারামেনের উৎপত্তি অস্পষ্ঠ। কিছু উৎস বলে এটি চীন থেকে উৎপত্তি পেয়েছে।[৬][৭][৮] অন্যান্য উৎস বলে এটি জাপানে বিশ শতকের প্রথম দিকে আবিষ্কার করা হয়।[৯][১০][১১] রামেন শব্দটি জাপানী যেটি চীনা শব্দ লামিয়ান (拉麵) থেকে ধার করা।[১২] ১৯৫০ দশকের পূর্বে রামেনকে শিনা শোভা(支那そば, যার অর্থ চীনা শোভা) ডাকা হত, কিন্তু আজকে চুকা শোভা(中華そば, যার অর্থও চীনা শোভা) ডাকা হয় কিংবা শুধু রামেন(ラーメン) ডাকা হয় যেটি বেশি পরিচিত।[৩]
১৯০০ সালের দিকে, রেস্তোরাগুলো চীনের ক্রুজিন পরিবেশন করা শুরু করে ক্যান্টন এবং সাংহাই থেকে যেটি প্রদান করে নুডলসের একটি সহজ খাদ্যের পদ রামেন, এবং লবণ ও শুকরের হাড়ের ঝোলের স্বাদ। অনেক চীনা লোক যারা জাপানে বসবাস করছিল তারা সহজে বহনীয় একটি খাবারে দোকান দেয় যেটি রামেন এবং পুডিংবিশেষ গাইজোয়া বিক্রি করতে শুরু করে শ্রমিকদের কাছে। ১৯০০ শতকের মাঝামাঝি এই দোকান গুলো একটি সুরেলা হর্ণ ব্যবহার করতে শুরু করে যাকে চারুমেরা(チャルメラ, পর্তুগিজ শব্দ চারামেলা থেকে) ডাকা হয়, তাদের উপস্থিতি জানান দিতে। শোয়া যুগের প্রথম দিক থেকে রামেন জনপ্রিয় খাবার হয়ে উঠে বাহিরে খাবার হিসাবে।
রামেন বিশেষজ্ঞ হিরোশি অসাকি এর মতে, প্রথম বিশেষায়িত রামেনের দোকান খোলা হয় ইয়োকহামাতে ১৯১০সালে।[৮]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এর পর, সস্তা ময়দা আমদানী হতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেটি জাপানের বাজার ছেয়ে যায়। একই সময়ে, লক্ষ লক্ষ জাপানী সেনাদল চীন এবং পূর্ব এশিয়া মহাদেশীয় অঞ্চলে তাদের পদগুলো থেকে ফিরে আসে দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ থেকে। তাদের অনেকেই চীনের রন্ধনশৈলী সম্পর্কে পরিচিত এবং পরবর্তিকালে তারা পুরো জাপানজুড়ে চাইনিজ রেস্তোরা দিতে শুরু করে। রামেন খাওয়া যখন জনপ্রিয়, কিন্তু এরপরও বাইরে যেতে বিশেষ দিনের প্রয়োজন ছিল।
১৯৫৮ সালে চটজলদি নুডলস আবিষ্কার করেন মমোফুকু আন্দো, নিশান ফুডসের তাইওয়ান-জাপানী প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান বর্তমানে তার ছেলে ককি আন্দো যেটি পরিচালনা করে। ২০ শতকের সেরা জাপানী আবিষ্কার বলা হয় একটি জাপানি তালিকায়,[১৩] যেটি যেকাউকে চটজলদি রামেন তৈরিতে সহায়তা করে শুধুমাত্র গরম জল যোগের মাধ্যমে।১৯৮০ দশকের শুরুর দিকে, রামেন জাপানের সংস্কৃতির অংশ হয়ে পড়ে, এবং সারাবিশ্বে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এর উপর পড়াশোনা করা হয়। এছাড়াও আঞ্চলিক বৈচিত্র্যেভেদে রামেন জাতীয় বাজার লক্ষ্যভেদ করতে থাকে এবং এটি তাদের আঞ্চলিক নাম ডেকে কেনা যায়। ১৯৯৪ সালে ইয়োকুহামাতে একটি রামেন জাদুঘর খোলা হয়।[১৪]
অঞ্চলভেদে ভিন্নতা
সম্পাদনাযেখানে সাধারণ রামেন পুরো জাপানজুড়ে পাওয়া যায় তাইসো যুগ থেকে, গত কয়েক দশক থেকে আঞ্চলিকভেদে রামেনের ভিন্নতা বিস্তার লাভ করে। এদের মধ্যে কিছু জাতীয়ভাবে লক্ষণীয়।
- টোকিও রামেন
- কিতাকাটা রামেন
- হাকাতা রামেন টনকতসু স্যুপের সাথে
- ওয়াকাইয়ামা রামেন
- সুকেম্যান ঝোপ দেয়া রামেন
- আবুরাশোভা তেলযুক্ত নুডলস
- তাকাইয়ামা রামেন
- হিয়াশি(ঠাণ্ডা) রামেন
- ভুট্টা মাখনের রামেন, বিশেষ করে একটি হক্কাইদো
- ঝারু রামেন
- সাপ্পোরো রামেন
- মুরোরান কারি রামেন
জাপানের রেস্টুরেন্ট
সম্পাদনারামেন বিভিন্ন ধরনের রেস্টুরেন্ট এবং জায়গায় পাওয়া যায় যার মধ্যে রামেনের দোকান, ইজাকিয়া পানীয় দোকান, কারাওকে হল, এবং পার্কগুলোতে। কিন্তু ভাল মানের রামেন সাধারণত শুধুমাত্র রামেনের জন্য বিশেষায়িত রামেন-ইয়া রেস্টুরেন্টগুলোতে পাওয়া যায়।
রামেন-ইয়া রেস্টুরেন্টগুলো মূলত প্রধান খাদ্যের পদ হিসাবে রামেন পরিবেশন করে, তারা খাবারের তালিকা ভিন্ন ধরনের রাখে। রামেন-ইয়া রেস্টুরেন্টগুলোতে রামেন ছাড়াও অন্যান্য খাবারের পদ পাওয়া যায় যার মধ্যে ফ্রাইড রাইস(চাহান বা ইয়াকিমেসহি বলে ডাকা হয়), গাইজোয়া(চীনা পুডিংবিশেষ) এবং বিয়ার।
ধাতুপাত্রের সংস্করণ
সম্পাদনাআখিয়াবারাতে, ভেন্ডিং মেশিন গরম রামেন পরিবেশন করে ইস্পাতের ধাতুপাত্রে, যেটি রামেনে ক্যান (らーめん缶)। এটি একটি জনপ্রিয় রামেন রেস্টুরেন্ট দ্বারা উৎপাদন করা হয় এবং এতে নুডলস, স্যুপ, ম্যানমা এবং শোকর থাকে থাকে। এটি দ্রুত নাস্তার লক্ষে তৈরি এবং এর সাথে ছোট একটি প্লাস্টিকের চামচ থাকে। এছাড়াও কিছু বিভিন্ন স্বাদের রামেন পাওয়া যায় যেমন তনকতসু এবং কারি।[১৫]